সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ক্লাস বন্ধ রেখে শেখরনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করার অভিযোগ উঠেছে। সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ-কে কটূক্তি, মিথ্যাচার, মানহানি, সম্মানহানিকর বক্তব্য ফেইজবুক মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে আনোয়ার হোসেন বেলু-কে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। রোববার ১৯ মার্চ দুপুর ২টার দিকে শেখর নগর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এই মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করেছে বলে জানান বেশ কয়েকজন অবিভাবক। মানববন্ধনের ব্যানারে আয়োজক হিসেবে “শেখরনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক মন্ডলী ও সকল ছাত্রীবৃন্দ” লেখা দেখা গেছে।
প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মদদে ক্লাস বন্ধ রেখে ‘জোর করে’ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে আনা হয়েছে বলে স্থানীয় অনেকে অভিযোগ করেছেন। মানববন্ধনে ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের আনা হয়েছিল।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তারা কি কারনে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছেন কিছুই জানেন না। শিক্ষকরা তাদের মানববন্ধনে আসতে বলাতে তারা এসেছেন ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, আমরা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়েছে পড়ালেখার জন্য। তাদের দিয়ে মানববন্ধন করানো অন্যায়। তাদের স্থানীয় ও ব্যক্তিগত রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে দিয়ে মানববন্ধন করাটা ঠিক হয়নি। তাছাড়া সেখানে যদি প্রতিপক্ষ কোন অঘটন ঘটাতো, আমাদের শিশুদের যদি কিছু হতো এর দায়ভার কে নিতো? যেসকল শিক্ষকরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাই।
বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক এমএ কালাম বলেন, সভাপতি আমাদেরকে শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে মানববন্ধন করার জন্য বলেছে। বিদ্যালয় সভাপতি নির্দেশেই আমরা শিক্ষার্থীদেরকে দিয়ে মানববন্ধন টা করিয়েছি। সভাপতি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধ করানোর নির্দেশ দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে চিনি দম্ভ করে বলেন বোঝেনই তো আমরা চাকরি করি।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি পলু দাস বলেন, আমার একার সিদ্ধান্তে না বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সকলের সম্মতিতে আমরা মানববন্ধনটি করেছি।
সিরাজদিখান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান ভূইয়া বলেন, সকাল ১০টা থেকে ৪টা ১০ মিনিট পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে থাকবে। এর বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সাহেব এই ধরনের কাজ করে থাকে তবে সেটি অন্যায় করেছে। আমি সঠিক ভাবে খতিয়ে দেখব।
মুন্সিগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা কামরুল ইসলাম খান বলেন, শিক্ষার্থীদের কে দিয়ে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের বাহিরে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি শিক্ষার্থীদের কে দিয়ে এমন ধরনের ঘটনা কেউ ঘটিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।