সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |

সিরাজদিখানে বড় দিন উপলক্ষে শুলপুর খ্রীস্টান পল্লীতে চলছে সাজসজ্জার প্রস্তুুতি


প্রকাশের সময় :২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ৫:১০ : অপরাহ্ণ

আনিছুর রহমান রুবেলঃস্টাফ রিপোর্টার

২৫ ডিসেম্বর খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড় দিন।এই দিন উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার তিন গ্রামের খ্রীষ্টান পল্লীর বাড়িতে বাড়িতে চলছে সাজসজ্জার ব্যাপক প্রস্তুুতি।
অতিথিদের নিমন্ত্রন করা হচ্ছে মোবাইল ম্যাসেজ, কার্ডসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বড়দিনে শুধু খ্রীষ্টান সম্প্রদায় নয় ঐসব এলাকার হিন্দু ও মুসলিম পরিবার গুলোকেও দাওয়াত করতে ভুল করছেন না তারা। অতিথি আপ্যায়নে কোন রকমের ত্রুুটি না রাখতে বাড়ি বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে রকমারী পিঠাপুলি। তবে বড়দিনের অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়নে কেক কেই প্রাধান্য দেয়া হয়। প্রতিটি বাড়ির সামনে সাজানো হচ্ছে ক্রিসমাস ট্রি। শিশুদের বন্ধু হিসেবে পরিচিত সান্তাক্রুসের উপহার পেতে আবেগ আপ্লুত হয়ে আছে শিশুরা। অপেক্ষার দিনক্ষণ শেষ হতে বেশি সময় দেরি না হলেও মহাব্যস্ত এ এলাকার খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের পরিবার গুলো।
বড় দিন উপলক্ষে নিমতলা বাজারের তৈরি পোশাক মার্কেট গুলোতে ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতাদের আনাগোনা চলছে। নিমতলা বাজারের — বস্ত্রালয়ের মালিক — জানান, রুচিশীল রকমারী পোশাকের সমাহারে দোকান সাজানো হয়েছে। প্রতি বছরের চেয়ে বিক্রি ভালই চলছে। উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে বেশ। শেষ পর্যন্ত ভালো বিক্রি হবে বলে আশা করছি। মুন্সীগঞ্জ জেলা খ্রীস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ও কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নয়ন রোজারিও বলেন, পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে সার্বিক সহযোগিতা করছে বলেই আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি। তাছাড়া এ উপজেলায় অন্যান্য ধর্মাবলম্বী লোকজন আমাদের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অনুষ্ঠানকে আরো মুখর ও প্রানবন্ত করে তুলবে।
শুলপুর সাধু জোসেফ গির্জার প্যারিস কমিটির সহ-সভাপতি সজল জন প্যারিস জানান, শুলপুর বড়ইহাজী গ্রামের খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের মূল কেন্দ্র সাধু জোসেফ গীর্জা। এই ৩ গ্রামের মূল অনুষ্ঠান শুলপুরে হয়ে থাকে।
২৪ ডিসেম্বর রাত থেকে আমাদের ধর্মীয় আচার শুরু হবে। ভাটিকান সিটির রাস্ট্র দূত শ্রদ্ধেয় আর্চবিশপ কেভিন র‌্যান্ডাল রাত ৮টায় খ্রীষ্টযাগে ও যীশু খ্রীষ্টের জন্ম দিনের কেক কাটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে, গ্রামের গীর্জা ও ধর্মপল্লী গুলোকে সাজানো হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ঝলমলে আলোক সজ্জায়। বড়ইহাজী,শুলপুর.প্যারিস কমিটির তৎপরতাও বেড়েছে। গীর্জার অভ্যন্তরে দৃষ্টি নন্দন ভাবে ডিসপ্লে করা হবে কুড়ে ঘরের ভিতর মাদার মেরীর কোলে যিশু খ্রীষ্টের মুর্তি। গীর্জায় প্রার্থনায় করতে আসা পূণ্যার্থীদের আগমন নিরবিচ্ছিন্ন করতে তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ ভলেন্টিয়ার টিম। সব মিলিয়ে আগাম উৎসব চলছে খ্রীষ্টান অধ্যুষিত গ্রাম গুলোতে।
অন্যদিকে, বড়ইহাজী গ্রামের সবিতা রোজারিও,শিউলী রোজারিও এবংলিনিয়া রোজারিও জানান, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পরিবার নিয়ে বড়দিন পালনের প্রস্তুতি নিয়েছি। শুলপুর,মজিদপুর,বড়ইহাজী তিনটি গ্রামের প্রায় ৩৮৫টি পরিবারে বড়দিনকে ঘিরে উৎসব পালনের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। ইতি মধ্যে নতুন পোশাক কেনাকাটা হয়ে গেছে। এলাকার হিন্দু ও মুসলামানদেরও দাওয়াত করেছি।
শুলপুর সাধু জোসেফ গির্জার ফাদার কমল কোড়াইয়া জানান, নবরাজ খ্রীষ্টকে গ্রহণ করতে বড় দিনের ৯দিন আগে থেকে নভেনা খ্রীষ্ট যাগ বা পাপস্বীকার পর্ব চলছে। সিরাজদিখান উপজেলার প্রায় ৩ হাজার পরিবারে উৎসব পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ উৎসব বড় দিনের কীর্তনের (ক্যারল) মধ্যে দিয়ে শেষ হবে। উৎসব নিরবিচ্ছিন্ন করতে প্রশাসনের সহযোগীতা চাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানার ওসি খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, গীর্জা ও এর আশপাশে সর্বাত্মক নিরাপত্ত্বা নিশ্চিত করা হবে। নিরাপত্ত্বার স্বার্থে ইতিমধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য চাওয়া হয়েছে। সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার বলেন, বড়দিন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগীতা করবে। নিরাপত্ত্বার দায়িত্বে পুলিশের বিশেষ টিম মাঠে থাকবে।


আরও খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১