আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফ্রান্সে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (৩০ জুন) অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে হতাশাজনক ফল পেয়েছে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জোট। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ম্যাক্রোঁর এনসেম্বল জোট প্রায় ২০.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হতে যাচ্ছে।
সোমবার (১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম দফার ভোটগ্রহণে প্রায় ৩৪ শতাংশ ভোট পেয়ে শীর্ষ স্থান দখল করতে যাচ্ছে মেরিন লে পেনের কট্টর ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন)। আর প্রায় ২৯ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হতে পারে বামপন্থী দলগুলোর জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট। ইপসোসসহ চারটি সংস্থার বুথফেরত জরিপে এমন চিত্র উঠে এসেছে। এ নির্বাচনে ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে।ফ্রান্সের পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ২৮৯ আসন প্রয়োজন। জনমত জরিপের সঙ্গে বুথফেরত জরিপের তেমন ব্যবধান নেই। তবে কারা সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, তা জানতে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে খারাপ ফলের জেরে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন ম্যাক্রোঁ। একই সঙ্গে দেশটিতে আগাম নির্বাচনের ঘোষণাও দেন।আগাম এই নির্বাচন নিয়ে ক্ষুব্ধ ম্যাক্রোঁর মিত্ররা। কারণ স্বাভাবিক নিয়মে ২০২৭ সালের আগে পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডানপন্থিদের অগ্রগতিতে শঙ্কিত হয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব রক্ষা করতেই আগাম নির্বাচনের ডাক দিয়েছেন ম্যাক্রোঁ।আগের নির্বাচনগুলোতে ফ্রান্সের ভোটাররা কট্টর ডানপন্থি দলগুলোকে সামনে আসতে দেয়নি। কিন্তু এবার জ্বালানির দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ডানপন্থিদের দিকে ঝুঁকেছে দেশটির সাধারণ মানুষ। কারণ ডানপন্থিরা জ্বালানির ওপর ভ্যাট কমাতে এবং ৩০ বছরের কম বয়সীদের আয়কর থেকে মুক্তির আশ্বাস দিয়েছে।
মেরিন লে পেন তার উত্তরাঞ্চলীয় নির্বাচনী এলাকা হেনিন-বিউমন্টে উৎফুল্ল সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণে বলেন, ‘গণতন্ত্র কথা বলেছে এবং ফরাসিরা আরএন ও তার মিত্রদের শীর্ষে রেখেছে। জনগণ কার্যত মাখোঁ শিবিরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘জনগণ স্পষ্টতই সাত বছরের অবমাননাকর এবং ক্ষয়কারী শাসনের পরে পৃষ্ঠা উল্টাতে চায়।ম্যাক্রোঁ ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন এবং উচ্চ ভোটার উপস্থিতির প্রশংসা করেছেন। দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে তিনি ভোটারদের ‘প্রজাতন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক’ প্রার্থীদের ভোটদানের আহ্বান জানিয়েছেন।
ইতোমধ্যে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, যে দলই জিতুক না কেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার বাকি মেয়াদ শেষ করবেন। ২০২৭ সাল পর্যন্ত তার মেয়াদ আছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটি তার দ্বিতীয় মেয়াদ। মেরিন লে পেন-এর উগ্র ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) আগামী ৭ জুলাই দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের পর ফরাসি জাতীয় অ্যাসেম্বলিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তাদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন।