ওসমান হোসাইন, কর্ণফুলী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা শিকলবাহা ২নং ওয়াড় ব্লক পাড়স্থ চলাচলের রাস্তার পাশে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ নিয়ে বিরোধের জেরে মা -ছেলেকে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে এ ঘটনায় এজাহারনামীয় মোট ছয় আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এখনো বাকী ৯ আসামী।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৯ টায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন-শিকলবাহা ইউনিয়নের ইসমত হাজীর বাড়ীর মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র মো. মোসলেম (৩৮) এবং একই ইউনিয়নের দ্বীপকালার মোড়ল এলাকার কামাল বাড়ীর জামাল আহমদ এর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪২)। এরা এজাহারনামীয় ২ নং ও ৯ নং আসামি।এ ঘটনায় এর আগে আরও ৪ জন গ্রেপ্তার ছিলেন।
ওসি দুলাল মাহমুদ জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে ঘটনার মূলহোতাসহ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ধরতে চেষ্টা অব্যাহত আছে।
জানা গেছে, গত ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় রাস্তার চলাচল জায়গা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হোসনে আরা বেগম (৪৫) ও তার ছেলে পারভেজ (২৩) নিহত হয়। একই ঘটনায় হোসনে আরার দুই ছেলে মো. আরজু (২২) ও মো. সিফাত (১৫) গুরুতর আহত হয়। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় পরদিন ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে নিহত হোসনে আরা বেগমের ছেলে জাফর আহমদ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগীদের বাড়ির পাশে আসামিপক্ষের একটি ঘর রয়েছে। এটি তারা সুপারি রাখার জন্য লোকমান হোসেন নামে একজনকে ভাড়া দেয়। ওই বাড়িতে বিভিন্ন সময় সুপারির গাড়ি আসার কারণে ভুক্তভোগীদের বাড়ির দেয়াল বিভিন্ন সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিপক্ষকে কয়েকবার বারণ করা হয়।
গত ৫ এপ্রিল ভুক্তভোগীরা বাড়ির দেওয়াল সংলগ্ন রাস্তায় একটি পিলার দেওয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ভুক্তভোগীদের কয়েকজন আহত হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীরা আদালতে একটি ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করে। আদালত অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজুর জন্য কর্ণফুলী থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশে মামলা রুজু হলে মঙ্গলবার বিকেলে আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে। তবে কাউকে গ্রেপ্তার না করে পুলিশ ফিরে গেলে সন্ধ্যার দিকে প্রতিপক্ষের লোকজন জড়ো হয়ে ভুক্তভোগীদের ওপর হামলা করে।
হামলায় দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে হোসনে আরা ও তার তিন ছেলে গুরুতর আহত হয়। তাদের চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে হোসনে আরা এবং তার এক ছেলে পারভেজকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।