সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ |

মূলপাতা জাতীয়

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস আজ


প্রকাশের সময় :১২ জুন, ২০২৪ ১২:৩২ : অপরাহ্ণ

নিজস্ব  প্রতিবেদক: আজ ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে। দিবসটি ঘিরে বাংলাদেশের এবারের প্রতিপাদ্য ‘শিশুশ্রম বন্ধ করি, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করি। দিবসটি পালন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং ইউনিসেফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অর্জনে ইতোমধ্যে ‘জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি, ২০১০’ ও জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২১-২০২৫ প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার। এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে ‘জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ।’ সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের পুনর্বাসন এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর বিকাশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমবিষয়ক আইএলও কনভেনশন অনুসমর্থন করেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শিশুশ্রম সমীক্ষা-২০০৩ অনুযায়ী বাংলাদেশে শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩২ লাখ। সরকারের পদক্ষেপের ফলে ২০২৩ সালে শিশুশ্রম সমীক্ষা অনুযায়ী শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ১৭ লক্ষে দাঁড়িয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে দেওয় বাণীতে শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে ও শিশুশ্রম নিরসনে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থাসহ সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেছেন, শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হলে শিশুর সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করে তাদের সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার বিকল্প নেই। শিশুশ্রম একটি বৈশ্বিক সমস্যা। শিশুশ্রম শিশুর স্বাভাবিক শৈশব ও পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি তাদের সঠিক মানসিক ও শারীরিক বিকাশ এবং শিক্ষা প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার টার্গেট ৮ দশমিক ৭ এর অধীনে ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশুশ্রম বন্ধের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রথাগত শিশুশ্রম নির্মূলের পাশাপাশি জোরপূর্বক শ্রম, আধুনিক দাসপ্রথা ও মানবপাচার, শিশুদেরকে সৈনিক হিসেবে ব্যবহারসহ নিকৃষ্ট শিশুশ্রমসমূহ নিষিদ্ধ ও নির্মূলে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ‘বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস ২০২৪’ উপলক্ষে গৃহীত সব কার্যক্রমের সাফল্য কামনা করেছেন তিনি। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ ও শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করাসহ শিশুশ্রম নিরসনে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও সচেষ্ট হতে হবে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে শিশুদের উন্নয়ন ও বিকাশে শিশু আইন প্রণয়ন ও প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেন। তিনি সংবিধানে শিশু অধিকার সমুন্নত রাখেন। বাংলাদেশের সংবিধান ও জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে শিশু শ্রম প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। শ্রমজীবী শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে প্রত্যাহারের লক্ষ্যে আমরা ‘জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি ২০১০’ প্রণয়ন করেছি। এ নীতি বাস্তবায়নে জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ, উপজেলা শিশুশ্রম পরিবীক্ষণ কমিটি, জেলা শিশুশ্রম পরিবীক্ষণ কমিটি এবং বিভাগীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ গঠন করা হয়েছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় শিশুদের জন্য ৪৩টি কাজকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হিসেবে চিহ্নিত করে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯০ হাজার শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্যে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘শিশুশ্রম নিরসন ও পুনর্বাসন প্রকল্প’ নামে মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে যা এ বছর শেষ হবে। গৃহকর্মে শিশুশ্রম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অনুযায়ী আমরা দেশকে সব ধরনের শিশুশ্রম থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২১-২৫ প্রণয়ন করেছি এবং এটি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। সরকার ‘জাতীয় শিশুনীতি-২০১১’, ‘শিশু আইন-২০১৩’, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭’ প্রণয়ন করেছে। এছাড়া সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের পুনর্বাসন এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের বিকাশে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতে বিনামূল্যে নতুন বই প্রদান করা হচ্ছে। প্রায় শতভাগ শিশু আজ স্কুলে যাচ্ছে। এছাড়া শিশুশ্রম নিরসনে আমরা বেসরকারি খাতগুলোকে সম্পৃক্ত করেছি। সহিংসতা ও শোষণ থেকে শিশুদের সুরক্ষা সম্পর্কে নিয়োগদাতাদের প্রশিক্ষিত করার বিষয়টিতে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি।

এদিকে দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যম দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে অনুষ্ঠান, টিভিসি প্রচার করবে। সারা দেশে কলকারখানা ও শ্রমঘন এলাকায় ব্যানার ফেস্টুন পোস্টার টানানো হবে। শিশুশ্রম নিরসনে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হবে। বিভিন্ন শিল্প এলাকার কলকারখানায় শিশুশ্রম নিরুৎসাহিত করতে বিশেষ পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। সূত্র: বাসস।


আরও খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১